দাগ

ভালবাসায় গল্পের শুরু (ফেব্রুয়ারী ২০২৩)

সাদিকুল ইসলাম
  • 0
  • ৪০
ভালোবাসা?
তুমি কেমন আছো?
কত দিন হয়ে গেলো কথা হয় না,
সবশেষ কবে দেখা হয়েছিল মনে নেই,
আচ্ছা বলতে পারো?
মানুষ কি করে এতোটা পাষাণ হয়?
কি করে প্রিয় মানুষটাকে ছেড়ে,
রাগে অভিমানে বছরের পর বছর
চলতে পারে?
কি করে ভুলে থাকতে পারে
তার প্রিয় মানুষটার সাথে
অজস্র ভালোবাসার খুনসুটি।
হয়তো বলবে -
কেন?
তুমিও তো বেশ আছো।
তোমার গোছানো সংসার!
সফল ক্যারিয়ার!
তুমি যা চেয়েছিলে তাইতো পেয়েছে।
আর
এই প্রাপ্তির তালিকায় তো আমার নাম ছিলো না।

ভালোবাসা?
তুমি কি করে বোঝবে স্বপ্ন পোড়ার জ্বালা!
থাক বাদ দাও।
তারপর!
কেমন আছো বললে না?
আচ্ছা তোমার রাগটা কি আগের মতই আছে?
নাকি সময়ে হাতুড়ি দর্পে খানিকটা মলিন হয়েছে?
তোমার কি মনে আছে সেদিনের কথা?
যেদিন হাত কেটে রক্ত দিয়ে
তোমায় প্রেম পত্র দিয়েছিলাম।
কি কান্নাকাটিই না করলে সেদিন,
আর
সাথে নিয়ে এলে ভালোবাসা জড়ানো
এক বস্তা মধুর বকা?
সেদিন তুমি কাঁদছিলে আর আমি হাসছিলাম।
বড্ড মিস করি।
না,তোমাকে না।
সেই মানুষটাকে,
আর আবেগ জড়ানো সেই দিন গুলো।

ভালোবাসা?
তুমি কি আমায় ফেরাতে পারতে না?
হয়তো বলবে যে চলে যাবার,
তাকে ফেরানো যায় না।
আচ্ছা আমার নাহয় অভিমান একটু বেশি,
সেটা তো তুমি জানতে,
তবুও কেন সেদিন আমায় পিছু ডাকলে না?
থাক, আজ আমার অভিমানের কথা থাক!
মূল্যহীন অভিমানের মূল্য চাওয়াটাই ভুল।
এবার বলো,
তোমার নতুন জীবনের কথা।
আচ্ছা,
তোমার চুলের মন মাতানো গন্ধটাকি আগের মতই আছে?
কত বছর পেরিয়ে গেছে,
কিন্তু সেই গ্রাণ আজও
নাকের চারিপাশে হামাগুড়ি খায়।
আচ্ছা, ভালো কথা!
তোমার ঠোঁটের নিচে কালো তিলটার কি খবর?
এখনো আগের মতই বসাও নতুন মানুষর জন্য,
নাকি নতুন মানুষ তোমার উষ্ণ চিবুক রাজ্যে
তিল পছন্দ করে না?
আমি তিল ভালোবাসতাম বলে,
আমার জন্য কাজল দিয়ে চাঁদমুখে তিল বসাতে,
দেখতে অনেকটা নায়িকা সখের মত লাগতো।
আদর করে তাই সখের পাখি বলে ডাকতাম।
লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকাতে।

ভালোবাসা?
কি করে ভুলে গেলে সবকিছু?
আমি নাহয় অভিমানের টেবলেট খেয়ে,
দুরে যাবার অভিনয় করলাম,
যাবার বেলায়
দুই পা এগিয়ে একপাশে পিছিয়ে গেছি,
ভেবেছিলাম
হয়তো তুমি পেছন থেকে ডাকবে।
কিন্তু ডাকলেনা,
তাইতো
এক পায়ের ব্যবধানে হাঁটতে হাঁটতে,
এক যুগ দুরে চলে এসেছি।
হয়তো ভেবেছিলে অগোছালো মানুষটা ,
তোমার থেকে দুরে গেলেই তোমার মুক্তি।
এই ভেবে আর পেছন ফেরে তাকাই নি।

ভালোবাসা?
তুমি কি আগের মতই ফোনে কম কথা বলো?
তোমার মনে পড়ে ? প্রতিদিন -
কেন আমাকে ফোন করনি?
এই নিয়ে,
তোমাকে কাঠগড়ায় দাড় করাতাম,
বিশ্বাস করো- তোমার ফোনের অপেক্ষায়,
প্রতিনিয়ত চাতক পাখির মত তাকিয়ে থাকতাম,
এই বুঝি তোমার কল আসবে,
ম্যাসেজ এর শব্দ শোনে,
দৌড়ে গিয়ে ফোন হাতে নিতাম।
দেখতে পেতাম কোম্পানির অফার।
রাগটা চরক গাছে উঠলেও নিরুপায়।
মাঝে মাঝে ভাবতে বাধ্য হতাম,
আমিতো একতরফা প্রেমের অনলে পোড়া বেগুন।
তাইতো আগুনের জ্বালা অনিবার্য।
আচ্ছা তোমার বর কি তোমার সব বায়না রাখে?
নাকি আমার মত ব্যাস্ততার অজুহাতে পালিয়ে বেড়ায়,
আমিতো আজও ব্যস্ততার ঢেকুর গিলি
থাক, আমার কথা।
আচ্ছা কলেজ ফাঁকি দেয়া ,
মধ্য দুপুরের স্মৃতি মাখা অতীত,
তোমার হৃদয়ের কলিং বেলে কখনো আঘাত করে?
নাকি চরম ঘন্টা বাজিয়ে,
চিরকালের ছুটি দিয়েছো।

আমি জানি তুমি কি ভাবছো।
তবে আমার ভাবনার তীরে,
আমার তরী ভিরাতে চাই না।
শুধু পাগলের মত
কিছু বলার স্বাধীনতা চাই।
রাজি আছো তো?
তবে শোন -
এক সময় হাতে বাঁশি নিয়ে
গভীর রাতে হিজল তলা দাপিয়ে বেড়ানো
বিশ্ব প্রেমিকের মনের আকাশে
আজ প্রচন্ড খরা।
বাঁকা ঠোঁটের মধুমাখা
সুরের গলিতে হাঁটতে হাঁটতে,
কখন যে মরুর পথ ধরেছি,
টের পাইনি।

এক সময় রাতকানা চোখ নিয়ে,
রুপের রসে ডুবে থাকা দুরন্ত ভ্রমর হলেও
আজ বোধগম্যের ভেলাতে বসে,
বোঝ পাতার রস চিবিয়ে খেয়ে ,
বোঝতে পেরেছি,
"গিরগিটি মশাই তোমার সেরা ছাত্র।"

একসময় তোমাকে দেখার অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে,
ছুটে চলা পাগলা ঘোড়া হলেও,
আজ অদৃশ্য চাবুকের আঘাতে
ক্ষত বিক্ষত।
নিয়তির যন্ত্রণাদায়ক ঠেলাগাড়ি চেপে
চলতে চলতে ক্লান্ত দেহে,
আপসোসের দীর্ঘশ্বাস,
তুমি বোঝে নিলে আমার দৌরাত্ম,
তাইতো
নিজেকে গুছিয়ে নিয়ছো নিজের মত।

এক সময় নাসিক্য নাচুনী নিয়ে ,
এলোকেশীর কেশের গন্ধে,
তালমাটাল হওয়া নাক
আজ হৃদয় পোড়া দু্র্গন্ধে,
দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
কৃত্রিমতার চাদর গায়ে,
কখন যে কালো কেশে রংধনু
বাসা বেধেছে বোঝাতে পারিনি।

একসময় এক বুক স্বপ্ন নিয়ে ,
তোমার কোলে মাথা রেখে,
যে ফসল বুনে ছিলাম সবুজ হৃদয় মাঠে,
আজ চৈত্রের খরতাপে জ্বলে পুড়ে ছাই।
গোলাভরা ফসল ফলানোর প্রাণপণ চেষ্টা থাকলেও
নিয়তি যাতাকলে,
আজ বিরহের দায় ঋণে দেউলিয়া প্রায়।

এক সময় বিশ্বাস ভরা নিশ্বাস নিয়ে,
রাজ্য জয়ের বাদ্য বাজাতে মশগুল থাকলেও
আজ অবিশ্বাসের বিষে ,
সুখের তৃষ্ণায়,
বুকের খাঁচা রুক্ষ মরুভূমি,,
তৃষ্ণা মেটাতে কলস ভরা জল যেখা‌নে
শিশির বিন্দুর মত মনে হয়।

একসময় প্রসংশার ঝুড়ি মাথায় নিয়ে,
হাতে হাত রেখে ঘুরে বেড়ানো
স্নিগ্ধ বিকেলের কোকিল থাকলেও,
আজ অভিযোগের মালা গলায় পড়ে,
পশুর হাটের পন্য।
মাথার উপর ছায়া দেয়া ঢেউটিন,
আজ,
মরিচার প্রলেপ মাখার দায় কাঁধে নিয়ে,
ভাঙ্গারীর দোকানে গড়াগড়ি খায়।

একসময় সারা জীবন পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি নিয়ে,
মরিচিকার পেছন ছুটতে ছুটতে ,
আজ পা পিছলে চোরাবালির গর্তে।
নির্বরতার চরকগাছে প্রতিশ্রুতি মশাই
ঝুলতে ঝুলতে অবশেষে হরিবল।

একসময় যন্ত্র‌ মানব হয়ে চরকির মত
ঘড়ির কাটার লেজ ধরে ঘুরেছি,
জীবন গড়ার তাগিদে,
আজ তুমিহীন এ জীবন
যেন অচল ঘড়ি।
তুমি আমি দুজনেই যে যার মত
পুষে রেখেছি রাগ,
লাভ(ভালোবাসা) হলো না কারোর,
রয়ে গেলো ভালোবাসার দাগ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নূসরাত জাহান ঊর্মি অসাধারণ লেখা!
ভালো লাগেনি ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
ধন্যবাদ। আপনার এই অনুপ্রেরণা আমাকে আরও বেশি উৎসাহিত করেছে।
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
ফয়জুল মহী অনন্য উপস্থাপন ???? মুগ্ধতা অশেষ ❤️
ভালো লাগেনি ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
কবি আপনার জন্য আমার পক্ষ থে‌কে কৃতজ্ঞতার মালা
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

প্রেম বিরহ মানষকে পূর্ণতা দেয় তবে সোনালী দিনগুলো ক্ষত হয়ে বার বার হৃদয় রাজ্যে হানা দেয়।

০৬ আগষ্ট - ২০১৯ গল্প/কবিতা: ৩৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪